সম্পাদকের কলম -
উৎসব বড় দীর্ঘ হ’ল, কোথাও বাড়াবাড়ি দীর্ঘও হ’ল। হবে না? দুর্গা পুজো, কোজাগরি, দীপাবলি! কোনও মেগা-সিরিয়াল নয়, মেগা-উৎসবের সিরিয়াল। তা হোক। লোকের ভালো লেগেছে। নগর গঞ্জ গ্রাম সুখের সাজ পরেছিল, আলোর ঝর্নাতলা জেগেছিল পথে, পথপাশে। এবং মানুষও, বিত্ত-বর্ণ-ধর্ম ভুলে, দৈনন্দিনের ঝুটঝামেলা কূটকচাল সব ভুলে নেমে পড়েছিল পথে। দুদিনে দুনিয়াটা কত বড় হয়ে এলো, যে যার অলিগলি ছেড়ে একসাথে হঠাৎ বিপূল বর্ণময় এক পৃথিবীর বাসিন্দা হয়ে গেল। এই হ’ল উৎসবের কল্যাণময় রূপ। এই আমাদের শারদীয়া!
আবার যারা একটু আলাদা, যারা ঘর ছেড়ে অনেকদিনের মতো বেরিয়ে যায়, বা যেতে চায়; কিম্বা যাদের দুগ্গো পুজোটা উৎসবের আগেই সারা হয়ে গেল, মানে যারা পূজাপূর্ব দিনে পাহাড়কোলে, পর্বতশিরে, গহীন অরণ্যে, নদীকিনারে হেঁটে গেল দিনের পর দিন – তাদের কাছে এই উৎসব এক অনন্ত পূর্ণিমার অবসর। এই সময় দুর্গমে যাওয়ার আয়াসলব্ধ স্মৃতি পুরোনো সুখের মতো তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করা যায়। চাইলে একটু বসে গড়িয়ে উদ্বৃত্ত সময় খুঁজে লেখাপড়াও খানিক করে ওঠা যায়। অবশ্য আমরা একটা কাজ এর মাঝে করে উঠতে চেয়েছি -যে ওয়েব-জানালা গতবছর প্রাকপূজার দিনে খোলা হয়েছিল, যেখানে শিখরাভিযান-সহ নানা দূরদুর্গমে যাওয়ার খবর নিয়মিত পরিবেশিত হচ্ছিল, সেই জানালাটিকে নতুন করে সাজানো এবং আরও নতুন আরও রোমাঞ্চকর সব খবরের জোগান দেওয়া। সুখের কথা, সেই কাজটি ইতিমধ্যে সারা হয়েছে।
আমাদের সহযাত্রী বন্ধুরা জানেন, নিকটজনেরাও জানেন, আরোহীর যাত্রাকাল প্রায় চার দশকের। কত অগণন জন হেঁটেছেন তা লেখাজোখা নেই, প্রবীণদের স্মৃতিতে নিশ্চয়ই আছে। তারা আজও হাঁটছেন, সঙ্গে হাঁটছে নবীন কিশোর সদ্যতরুণ। কোন এক আশ্চর্য অজ্ঞাত বাঁশির ডাক শুনে এরা সবাই ‘সুদূরের পিয়াসী’। ওরা এই ছোটো চৌহদ্দি ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে চায়, বেরিয়ে পড়েও। সন্দেহ নেই, দুর্গমে অভিসার জারি রাখবে ওরাই, আগামীদিনে। আর কে না জানে, যাওয়া থাকলে তার খবর থাবে, গল্প থাকবে, লেখাজোখা থাকবে। একদিন তা ইতিকথাও হবে। আমাদের বিশ্বাস, এই কাজে আপনারাও শরিক হবেন, খবরের আদানপ্রদান চলবে, গড়ে উঠবে গল্পশোনা ও গল্প বলার অভ্যাস।
সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। আর হ্যাঁ, সঙ্গে থাকবেন।